কক্সবাজার, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

ফেসবুক লাইভে এসে ৪ মাঝিকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন রোহিঙ্গা যুবক

কক্সবাজারের কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সম্প্রতি হত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঠিক এই সময়ে উখিয়ার ক্যাম্পে এক মাসে চার মাঝিকে হত্যার বিষয়ে ফেসবুক লাইভে এসে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলো মোহাম্মদ হাশিম (২০) নামের এক যুবক। সে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘ইসলামী মাহাজ’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য বলে দাবি করে নিজেকে। তিনি উখিয়া ১৮নং ক্যাম্পে ব্লকের ৯৩ আব্দুল জাব্বারের ছেলে।

তার ফেসবুক লাইভের ভিডিওতে দেখা যায়, সে একটি অস্ত্র নিয়ে ভিডিওতে এসে চার মাঝির মধ্যে কাকে কিভাবে হত্যা করেছিল তার লোমহর্ষক বর্ণনা দিচ্ছেন।

মোহাম্মদ হাশিম লাইভে বলেন, তার মত ২৫জন যুবককে অস্ত্র দিয়েছে ইসলাসী সংগঠন মাহাজ। যাদের কাজ ছিল হত্যার মিশন বাস্তবায়ন। যার জন্য আমাদের দেয়া হতো মোটা অংকের টাকা।

আমাদের মূল কাজ ছিল যারা প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করে তাদের হত্যা করা। সম্প্রতি সময় ৫ থেকে ৬দিনের মধ্যে আমরা ৩ মাঝিসহ এক স্বেচ্ছাসেবককে হত্যা করেছি।

লাইভে খুনের শিকার মাঝিদের নামও বলেছেন এই যুবক। তিনি বলেছেন, ১৮নং ক্যাম্পের হেড মাঝি জাফর, ৭নং ক্যাম্পের ইসমাঈল, কুতুপালং এক্সটেনশন ক্যাম্প-৪ এইচ ব্লকের এরশাদ ও হেড মাঝি আজিমুল্লাহকে তারা হত্যা করেছেন।

একইভাবে লাইভে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ ইসলামী মাহাজ সংগঠনের চার মুখপাত্রের নামও বলেন মোহাম্মদ হাশিম। তারা হলেন, জিম্মাদার সাহাব উদ্দিন, রহমত উল্লাহ, হেড মাঝি ভুইয়া, মৌলভী রফিক। এই চারজন এই সংগঠনের নেতৃত্ব দেন বলে জানান এই রোহিঙ্গা যুবক।

লাইভে মোহাম্মদ হাশিম আরও বলেন, তাদের সামনে আরও বড় মিশন ছিল। কিন্তু সে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। তাই এই খারাপ জগত ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান।

মোহাম্মদ হাশিমের সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই ভিডিও প্রচারের পর থেকে ক্যাম্পে মাঝিসহ নেতৃস্থানীয় রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গা সংগঠন ইসলামি মাহাজ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব রকমের অপরাধ করে থাকে এবং ক্যাম্পের বড় ধরনের নাশকতা করে এ সংগঠনের সদস্যরা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ভিডিওটা আমরা দেখেছি। এই যুবক যাদের নাম উল্লেখ করেছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা ক্যাম্পে নিরাপত্তায় সবসময় প্রস্তুত। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

পাঠকের মতামত: